গাজীপুর মহানগর প্রতিনিধি: গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানার দক্ষিন খাইলকুর এলাকায় ঝুট ব্যবসাকে কেন্দ্র করে আবুল হোসেন নামে এক ব্যবসায়ীকে মারধর করে মোবাইল ছিনতাই, ভাঙচুর ও পাঁচ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেছে স্থানীয় এক বিএনপি নেতা।
নগরীর ৩৮ নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি কামরুজ্জামান কামরুলের বিরুদ্ধে উঠা এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে গাছা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে ভোক্তভুগি। এ ঘটনায় এরইমধ্যে জনমনে ও শ্রমিকদের মধ্যে তীব্র ভয় ও আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।
প্রাপ্ত অভিযোগে জানা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর, সোমবার বিকালে নিজের প্রতিষ্ঠানে ব্যবসা পরিচালনা করার সময় অজ্ঞাতনামা ২৫/৩০ জন সন্ত্রাসী ব্যক্তি রামদা, ছেন, চাপাতি, লোহার দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বে-আইনীজনতাবদ্ধ হয়ে প্রতিষ্ঠানে ঝুট নামানোর সময় ব্যবসায়ীর কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে মারধর, হামলা, ভাঙচুর, মোবাইল ছিনিয়ে নেয় তারা। ব্যবসায়ীর হাতে থাকা মোবাইলটি অভিযুক্ত বিবাদী ভেঙে ঘুরিয়ে দেয়।
এ ঘটনায় ঝুট ব্যবসায়ী আবুল হোসেন (৫১) চার জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ২৫ থেকে ৩০ জনের নামে গাছা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে তিনি বলেন, বিগত আনুমানিক ৩০ বৎসর যাবৎ গাছা থানাধীন দক্ষিন খাইলকুর এলাকায় মের্সাস পপি এন্টারপ্রাইজ নামীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ সুনামের সহিত ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। অভিযুক্ত ৩৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি কামরুজ্জামান কামরুল প্রায় সময় ব্যবসায়ী আবুল হোসেনের কাছে নগদ অর্থ চাঁদা দাবী করর মর্মে অভিযোগে জানান।
রুনা ফ্যাশন বিল্ডিংয়ের পদ্ম সাথিলা ও স্পিট গামেন্টস থেকে আমার ব্যবসায়ীক গোডাউনে ট্র্যাক থেকে ঝুট নামানোর সময় কামরুজ্জামান কামরুল (৪৮), পিতা-সামসুল হক মাস্টার, রাকিব (২৩), পিতা-আব্দুল কাদের জিলানী, কার্টুন সুমন (৪৮), পিতা-অজ্ঞাত, স্বেচ্ছাসেবক দলের স্থানীয় নেতা নুরুজ্জামান রুবেল (৩৬), পিতা-নুরুল ইসলাম, সর্ব সাং-দক্ষিন খাইলকুর, ওয়ার্ড নং-৩৮, গাছা থানাসহ আরো ২৫-৩০ জনের সংঘবদ্ধ দলের উল্লেখ করেন।
এদিকে, গত বুধবার ৪ ডিসেম্বর ঝুট ব্যবসাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়াসহ পাঁচ রাউন্ড ফাঁকাগুলি বর্ষণ এবং কয়েকজন আহতের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা যায়। ঘটনাটি ঘটেছে গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানাধীন ডেগের চালার ফকির মার্কেট এলাকায়। এ নিয়ে এলাকাবাসী ও শ্রমিকদের মধ্যে চরম উত্তেজনা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।
ভুক্তভোগী শাওন (২৫) সাংবাদিকদের জানান, ঘটনার সময় পথচারীরা ভয়ে দৌড়াদৌড়ি করে ছুটে পালায় অনেকে বিভিন্ন দোকানের ভিতর আশ্রয় নিয়েছে। দুই থেকে তিনটা গুলির শব্দ পেয়েছি। সুজন থানায় অভিযোগ করলে পরিবারের সদস্যদের মেরে ফেলবে বলে হুমকি দেয় দুর্বৃত্তরা। ভয়ে আতঙ্কে বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না বলেও সাংবাদিকদের জানায়।
এলাকাবাসী ও ৩২ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আব্দুল হামিদ অভিযোগে গাছা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী আদম আলী কে এক নাম্বার বিবাদী করে ৩২ জনের নাম উল্লেখ করে গাছা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এ বিষয় নিয়ে গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলী মোহাম্মদ রাশেদ সাথে কথা বললে তিনি বলেন বিএনপি’ থানার নেতাকর্মীরা বসে সমাধান করেছে। ৩৮ নং ওয়ার্ডের বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গাজীপুর মেট্রোপলিটনের উপ পুলিশ কমিশনার অপরাধ দক্ষিণ এন এম নাসির উদ্দিন বলেন, উভয় ঘটনা তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।